যেভাবে বিলীন হয়েছিল সিন্ধু সভ্যতা

প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার অন্যতম নিদর্শন সিন্ধু সভ্যতা। ব্রোঞ্জ যুগের এই সভ্যতা ৩৩০০–১৩০০ খ্রিস্ট্রপূর্ব পর্যন্ত ছিল। সিন্ধু সভ্যতার সমাপ্তি নিয়ে দীর্ঘ দিন নানান মত ছিল ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের। অবশেষে বেশিরভাগই একমত হন একটা তত্ত্বে, যে ২০০ বছরের খরাতেই শেষ হয়ে গিয়েছিল ওই প্রাচীন সভ্যতা।

কিন্তু এবার সেই মতকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিলেন আইআইটি খড়গপুরের ভূতত্ত্ব এবং ভূপদার্থ বিভাগের একদল গবেষক। দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা উত্তরপশ্চিম হিমালয়ের গত ৫০০০ বছরের আবহাওয়া, ভূগোল নিয়ে গবেষণা চালিয়ে বুঝতে পেরেছেন, সিন্ধু সভ্যতার হারিয়ে যাওয়ার কারণ, ২০০ নয়, দীর্ঘ ৯০০ বছর ধরে চলা খরা। আইআইটি খড়গপুরের নতুন ওই রিপোর্ট এই মাসে কোয়াটারনারি ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে প্রকাশিত হবে।

গবেষণা দলের নেতা তথা ভূতত্ত্ব বিভাগের ফ্যাকাল্টি অনিল কুমার গুপ্তা বলছেন, গবেষণায় তাঁরা জানতে পেরেছেন, সিন্ধু সভ্যতা যে অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল সেখানে প্রায় ২৩৫০ থেকে ১৪৫০ খ্রিস্ট্রপূর্ব পর্যন্ত মৌসুমি বায়ু অত্যন্ত দুর্বল ছিল। টানা ৯০০ বছর ধরে উত্তরপশ্চিম হিমালয়ে খরা চলেছিল। ফলে ওই এলাকার যাবতীয় নদী, হ্রদ, জলাশয় শুকিয়ে গিয়েছিল।

যে হিমবাহ থেকে সিন্ধু নদের উৎপত্তি, তা থেকেই লেহ্–লাদাখ অঞ্চলে অবস্থিত সো মোরিরি হ্রদেরও উৎপত্তি। হ্রদটির বর্তমান এবং তখনকার অবস্থা পরীক্ষা করেও তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, দীর্ঘকালীন খরায় হ্রদের অস্তিত্বই প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল।

জীবনরক্ষার তাগিদে সিন্ধু অঞ্চলের বাসিন্দারা পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতের দিকে চলে আসেন। যার ফলে বেড়ে ওঠে গাঙ্গেয় সভ্যতা এবং দক্ষিণ ভারতীয় সভ্যতা। নতুন এই তথ্য নিঃসন্দেহে সহায়ক হবে প্রাচীন ভারতের সভ্যতা এবং আবহাওয়া সম্পর্কে আরও বিশদে জানতে।

সূত্র : আজকাল

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন