পপকর্ন নিয়ে যতো অজানা

উচ্চ ফাইবার ও স্বল্পমাত্রার ফ্যাট সমৃদ্ধ ভুট্টার শস্য দানা থেকে তৈরি পপকর্ন প্রায় সকলের পছন্দের একটি খাবার। সিনেমা হলে বা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সময় হাতে পপকর্নের প্যাকেট হাতে না থাকলে, পুরো আয়োজনটাই অপূর্ণ মনে হয়।

খুব সহজেই পপকর্ন তৈরি করা যায়। ভুট্টার প্রতিটি দানার নিজস্ব আর্দ্রতা থাকে। শস্য দানাতে তাপ দিলে সেই পানি বাষ্পে পরিণত হতে থাকে। ভুট্টার দানাগুলোর খোসা পানি ভেদ্য হয়। তাই যখন ভুট্টার দানাগুলোর ওপর তাপ লাগে তখন ভেতরের পানি বাষ্পে পরিণত হতে শুরু করে এবং খোসায় চাপ সৃষ্টি হয়। একসময় খোসাটি ফুটে যায়।

ফুটার সময় ‘পপ’ করে এক ধরনের শব্দ হয় বলে খাদ্যটির নামকরণ হয়েছে পপকর্ন। সাধারনত ৪০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা ১৭৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ভুট্টার দানা ‘পপ’ শব্দ করে।

পপকর্ন সম্পর্কে আরো কিছু মজার তথ্য হল:
• আমরা যে পপকর্ন খাই, সেই ভুট্টার বৈজ্ঞানিক নাম Zea mays everta। শুধু মাত্র এই প্রজাতির ভুট্টার শস্য ফুটে উঠে বা পপ করে।

• প্রায় ৯ হাজার বছর আগে মেক্সিকোতে ভুট্টার চাষ এক প্রকার জংলি ঘাস থেকে আবিষ্কৃত হয় এবং প্রায় ৫ হাজার বছর আগে পপকর্ন-এর প্রচলন হয়।

• ১৮৪৮ সালে প্রথম ‘popped corn’ শব্দটি ‘Dictionary Of Americanism’-এ স্থান পায়। তার আগ পর্যন্ত পপকর্ন ‘pearls’ বা ‘nonpareil’ নামে পরিচিত ছিল।

• ১৮৯৩ সালে চার্লস ক্রেটরস (Charles Cretors) প্রথম পপকর্ন তৈরির মেশিন আবিষ্কার করে।

• যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রদেশ Illinois (ইলিনয়েস)-এর জাতীয় জলখাবার হল পপকর্ন। ১৯৫৮ সাল থেকে প্রতি বছর ১৯ জানুয়ারি দিনটিকে তারা জাতীয় পপকর্ন ডে হিসাবে পালন করে।

• যুক্তরাষ্ট্রের Nebraska (নেব্রাস্কা) প্রদেশে এক বছরে প্রায় দুইশ পঞ্চাশ মিলিয়ন পপকর্ন উৎপাদন করা হয়। যা সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত এক চতুর্থাংশ পপকর্নের সমানুপাতিক।

• ঐতিহ্যগতভাবে আমেরিকার স্থানীয় আদিবাসীরা পপকর্ন নানা ধরণের শুকনা মসলা দিয়ে মাখিয়ে খায়। এমনকি তারা পপকর্নের স্যুপও বানিয়ে খায়।

• একটি ভুট্টার শস্য পপ করার সময় বাতাসে তিন ফুট পর্যন্ত উঠতে পারে।

• ভুট্টার শস্যে অন্য যে কোনো শস্য দানার চেয়ে বেশি প্রোটিন রয়েছে। একটি ডিম এর চেয়ে বেশি আয়রন ও আলুর চিপস এর চেয়ে বেশি ফাইবার রয়েছে।

• ভুট্টা যদি কখনো ফ্রিজে রাখা হয়, তবে সেই ভুট্টার শস্য কখনো ফুটবে না। ফ্রিজে রাখার কারনে ভুট্টা শস্যের আর্দ্রতা কমে যায়।

• প্রাচীন কালে মানুষ বালি গরম করে সেখানে ভুট্টার শস্য ফুটিয়ে পপকর্ন তৈরি করতো।

• এক কাপ ভুট্টার শস্যদানা ফুটে প্রায় ১ হাজার ৬শটি পপকর্ন হয়।

• পপকর্ন সাধারনত দুই ধরনের আকৃতির হয়। মাশরুম ও স্নোফ্লেক। সাধারনত সিনেমা হলগুলো যে পপকর্ন বিক্রি করে তা স্নোফ্লেক আকৃতির হয়।

• সমগ্র পৃথিবীর মানুষের মধ্যে অ্যামেরিকানরা সবচেয়ে বেশি পপকর্ন খায়।

• বাটির নিচে পরে থাকা আনপপড (unpopped) পপকর্ন গুলোকে ওল্ড মেইড বলা হয়

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন